সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম জানুন

সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম

সিম কার্ড হারিয়ে গেলে আমরা অনেকেই সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে চাই। সেক্ষেত্রে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা থাকলে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে সহজ হবে।

সিম কার্ড হারিয়ে যাওয়া ছাড়াও অনেক সময় আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে আপনার ব্যবহৃত সিম কেউ তুলে নিতে পারে। সে সময়ও সিম কার্ড বন্ধ করা বা সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় সিম রেজিস্ট্রেশন চেক করলে আপনার নামে কয়টি সিম রয়েছে তা জানতে পারবেন।

অনাকাঙ্ক্ষিত কোন সিম যদি আপনার নামে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা উচিত। প্রত্যেকটি সিম কোম্পানির বাংলালিংক, রবি, জিপি, টেলিটক রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার সিস্টেম ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। চলুন তাহলে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেই: 

সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে কি কি লাগবে?

আমরা যে কোম্পানির সিম কার্ড ব্যবহার করি না কেন, সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করতে হয়। সিম চুরি হয়ে গেলে বা আপনার নামে অনাকাঙ্ক্ষিত একাধিক সিম ব্যবহৃত হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব SIM Registration Cancel করে ফেলুন। সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে যা যা লাগবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো:

  • ফিঙ্গারপ্রিন্ট, 
  • জন্ম তারিখ, 
  • জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার (রেজিস্ট্রেশন কারীর)।

সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা ছাড়াও সিম রেজিস্ট্রেশন পরিবর্তন করার জন্য এই একই তথ্যের প্রয়োজন হবে।

সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম

সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য সাধারণত দুইটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। (১) হেল্প লাইনে কল করে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা, (২) কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা। সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করার জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার, রেজিস্ট্রেশন কারীর জন্ম তারিখ এবং মালিকের নাম ইত্যাদি জমা দিতে হবে। 

হেল্প লাইনে যোগাযোগ করে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম

সরাসরি কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে যদি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা সম্ভব না হয় তাহলে হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন। তবে হেল্পলাইনে যোগাযোগ করার আগে আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে আপনি যে সিমটি ব্যবহার করছেন তা কার নামে রেজিস্ট্রেশন করা রয়েছে।

সিমটি কার নামে রেজিস্ট্রেশন করা তা জানার জন্য আপনার ফোনের ডায়াল অপশন এ গিয়ে *16001# কোডটি ডায়াল করতে হবে। পরবর্তীতে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের শেষের চারটি ডিজিট বসাতে হবে। এ পর্যায়ে আপনি জানতে পারবেন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করে মোট কয়টি সিম রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে আপনি যে সিম ব্যবহার করেন সেই অপারেটর এর কাছে (helpline number) এ কল করতে হবে। হেল্প লাইন নাম্বারে কল করার জন্য এক্ষেত্রে যার নামে সিম রেজিস্ট্রেশন করা তাকেই কল করতে হবে।

রেজিস্ট্রেশন কারী যদি নিজেই কল করেন তাহলে কাস্টমার কেয়ার থেকে তার কাছে কিছু তথ্য জানতে চাওয়া হবে। আপনি যে কারণে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে চাচ্ছেন তার সঠিক তথ্য তাদের জানাতে পারলেই তারা সাথে সাথে আপনার সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার অনুরোধ গ্রহণ করবেন।

আরো পড়ুনঃ সত্যায়িত কাগজের মেয়াদ কতদিন থাকে

কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করুন

কাস্টমার কেয়ার যদি আপনার কাছাকাছি থাকে তাহলে আপনি স্বশরীরে কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে sim registration বাতিল করতে পারেন।

এক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার, মোবাইল নাম্বার, জন্ম তারিখ ইত্যাদি। কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে এ তথ্যগুলো জমা দেওয়ার সাথে সাথেই কারা আপনাকে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য সাহায্য করবে।

জিপি সিম রেজিস্ট্রেশন কিভাবে বাতিল করবেন

জিপি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য সরাসরি গ্রামীণফোন কাস্টমার কেয়ার এ চলে যেতে হবে। সেখানে কাস্টমার কেয়ারের যে প্রতিনিধি আপনার সাথে কথা বলবেন তার কাছে জিপি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাকে অবগত করবেন।

সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি আপনার কাছে জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার, ফিঙ্গারপ্রিন্ট (যদি লাগে) চাইতে পারেন। আইডি প্রুফ যদি সঠিকভাবে করতে পারেন তাহলে ২ দিন অর্থাৎ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আপনার জিপি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে।

জিপি অতিরিক্ত সিম বন্ধ করার জন্য ১২১ নম্বরে কল করে কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে।

টেলিটক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম

টেলিটক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য টেলিটক এর কাস্টমার কেয়ারে পৌঁছাতে হবে। টেলিটক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার জন্য আপনাকে টেলিটক কাস্টমার কেয়ার এর প্রতিনিধির সাথে কথা বলতে হবে। কাস্টমার কেয়ারে যাওয়ার সময় অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার সাথে নিতে হবে।

কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধি আপনার কাছ থেকে জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার নিয়ে যাচাই বাছাই করে দেখবেন। তথ্য সঠিক মনে হলে তারা আপনার টেলিটক সিম রেজিস্ট্রেশন টি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাতিল করে দেবেন। 

বাংলালিংক সিম রেজিস্ট্রেশন কিভাবে বাতিল করবেন

বাংলালিংক সিম রেজিস্ট্রেশন করার জন্য বাংলালিংক সিম এর ব্যবহারকারীকে স্বশরীরে Banglalink customer care এ উপস্থিত হতে হবে। বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারে পৌঁছানোর আগে ভোটার আইডি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি সাথে করে নিয়ে যেতে হবে।

সেখানে পৌঁছে কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধির কাছে আপনার সিম বন্ধ করতে চান সে বিষয়ে খুলে বলতে হবে। তারা আপনার কাছে আইডি কার্ডের প্রমাণ চাইলে আপনাকে আইডি কার্ড জমা দিতে হবে এবং অন্য কোন তথ্য চাইলে তা জমা দিতে হবে। এরপর তারা কিছু সময়ের মধ্যে আপনার বাংলালিংক সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেবে। 

আরো পড়ুনঃ চেকের মেয়াদ কতদিন থাকে

রবি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার নিয়ম

রবি সিম হারিয়ে গেলে, রবি সিম বন্ধ করতে চাইলে, রবি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে চাইলে সরাসরি রবি কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করুন। রবি কাস্টমার কেয়ারে পৌঁছে সেখানে রবি কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধির কাছে বলতে হবে যে আপনি আপনার রবি সিমের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে চাচ্ছেন।

এরপর তারা আপনার কাছে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার জানতে চাইবে। নাম্বার যদি সঠিক থাকে এবং তারা যদি আপনার কাছে অন্য কোন তথ্য জানতে চায় এবং তা যদি সঠিক থাকে তাহলে তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে রবি সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেবে।

FAQ’s 

ঘরে বসে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার উপায় কি? 

ঘরে বসে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে আপনার সিমের কাস্টমার কেয়ারে ফোন করুন। 

সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে কতদিন সময় লাগে? 

সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে ১-৩ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। 

সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে কত টাকা সময় লাগে? 

নিজের সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে কোন টাকা লাগে না। 

সারকথা 

এই ব্লগে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার বিস্তারিত নিয়ম উল্লেখ্য করেছি। আপনার যদি কোন সিমের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার বাতিল করার থাকে, তাহলে উপরোক্ত নিয়ম অনুসরণ করে সিম রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারেন।

Similar Posts

  • জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর বেতন কত

    আপনার কি ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার ইচ্ছা আছে? কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট এর বেতন কত টাকা জানেন না। তাহলে আজকের পোস্ট থেকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বেতন কত টাকা জেনে নেওয়া যাক। ম্যাজিস্ট্রেট হাওয়ার স্বপ্ন কে না দেখে। দেশের প্রায় অধিকাংশ মেধাবী শিক্ষার্থী ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন দেখে থাকে। তবে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের বেতন ভাতা নিয়ে আমাদের কিছু প্রশ্ন থাকে।  তাই চলুন, আজকের…

  • আউটসোর্সিং চাকরির মেয়াদ, বেতন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখুন 

    আউটসোর্সিং সম্পূর্ণ অস্থায়ী একটি চাকরি। যার কারণে এই চাকরির মেয়াদ কতদিন তা নিয়ে আমাদের প্রশ্নের অন্ত নেই। তাই আসুন আউটসোর্সিং চাকরির মেয়াদ কতদিন থাকে এবং মেয়াদ বৃদ্ধি উপায় জেনে নেই।  আউটসোর্সিং চাকরির মেয়াদ কতদিন সাধারণত আমাদের দেশে আউটসোর্সিং চাকরির মেয়াদ থাকে সবোর্চ্চ ৩ বছর। কিন্তু এটা একদম নির্ধারিত সময় নয়। কারণ আউটসোর্সিং চাকরির মেয়াদ উর্ধ্বতন…

  • প্রাণ কোম্পানির বেতন কত

    প্রাণ কোম্পানিতে চাকরি করতে চাচ্ছেন কিন্তু প্রাণ কোম্পানির বেতন কত টাকা জানেন না। তাহলে আজকের পোস্ট থেকে প্রাণ কোম্পানির সকল কর্মীর বেতন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।  দেশের প্রধান কয়েকটি পণ্য সামগ্রী কোম্পানির মধ্যে প্রাণ কোম্পানি অন্যতম। দেশের প্রায় অর্ধেক পণ্য সামগ্রী এই কোম্পানির দখলে। প্রত্যেক মাসে বা বছরে প্রাণ কোম্পানি হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ করে…

  • চেকের মেয়াদ কতদিন থাকে

    চেক হলো এক ধরনের হস্তান্তরযোগ্য লিখিত দলিল যার মাধ্যমে ব্যাংক হতে অর্থ প্রদান করা হয়। কিন্তু শুধু চেক থাকলেই ব্যাংক থেকে যে টাকা পাবেন এমনটা নয়। কারণ চেকের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে সেই চেকের কোন মূল্য থাকে না। তাই আসুন, চেকের মেয়াদ কতদিন থাকে এবং বৈধ চেকের মেয়াদ কত মাস তা জেনে নেই। চেকের মেয়াদ কতদিন থাকে?…

  • সত্যায়িত কাগজের মেয়াদ কতদিন থাকে

    সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন চাকরি বা কাজে সত্যায়িত কাগজ লাগে। চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে সত্যায়িত কাগজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে সত্যায়িত কাগজের মেয়াদ কতদিন থাকে তা নিয়ে আমাদের প্রশ্নের শেষ নেই। সাধারণত সত্যায়িত কাগজের নির্দিষ্ট কোন মেয়াদ থাকে না। কারণ সত্যায়িত কাগজের মেয়াদ নির্ভর করে ব্যাবহারের উদ্দেশ্য ও প্রয়োজনের উপর। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে সত্যায়িত কাগজের সময়সীমা নির্দিষ্ট থাকে।…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *